৩০শে চৈত্র, ১৪২৪

আমি বর্তমানে এখানকার একটা স্বনামধন্য Higher Secondary স্কুলে গানের শিক্ষিকা হিসেবে নিযুক্ত। তাছাড়াও প্রতি শনি ও রবিবার বাড়িতেই গানের ক্লাস করাই। তাতে যা আয় হয়, আমাদের কোনোরকমে চলে যায়।

একবার ভেবেছিলাম বিয়ের গয়নাগুলো বিক্রি করে দেব, কিন্তু মামনি করতে দেয়নি।

-"তুমি বাড়ির লক্ষ্মী ! গয়না বিক্রি করোনা।"

এই বলে, নিজেই স‍্যাঁকরা ডেকে, নিজের বিয়ের যাবতীয় গয়না বিক্রি করে দিয়েছিল, আমাকে না জানিয়েই। খুব খারাপ লেগেছিল আমার। তাতে মামনি বলেছিলেন,

-"আমি অসুস্থ। বিছানা থেকে ওঠার ক্ষমতা নেই। তুমিই তো করছো সব কিছু। আমার গয়না বেচে যা টাকা এসেছে, আর কিছু না হোক আমার আয়ার খরচটা হয়ে যাবে।"

এতকিছু খারাপের মধ্যে একটাও কিছু যদি ভালো হয়ে থাকে, সেটা আমাদের জীবনে এই সুধা মাসির আগমন। সুধা মাসি মামনির আয়া। অদ্ভুত সুন্দর একটা মানুষ। বয়স মামনি-র থেকে একটু ছোটই হবে। মামনিকে খুব যত্ন করে। সুধা মাসি না থাকলে হয়তো আমার চাকরিটাও ঠিক করে করা হতো না।

ও হ্যাঁ !! জেঠু আর জেম্মা এসেছিলেন কিছুদিন আগে। ওঁদের কাছেই শুনলাম, বাবা মা নাকি প্রায় নাওয়া খাওয়া বন্ধ করেছেন। খুব অবাক লেগেছিল।

এতকিছু ঘটে যাওয়ার পর ও, ওই বাড়ি থেকে আমার দাদা বৌদি আর এইবার জেঠুরা ছাড়া আর কেউ আসেননি। আমার বাবা মাও না।

জেম্মা বলেছিলেন, "তোর মা তোর এই অবস্থা সহ্য করতে পারবে না, পুপুল"

'অবস্থা' বলতে এই যে, আমি আর দামি জামাকাপড় afford করতে পারিনা, আর গয়না যা আছে তা পড়তে ইচ্ছে করে না। মামনি আমাকে অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যাতে আমি ওগুলো পরি কিন্তু আমার ভালো লাগেনা।

আর চেহারার মধ্যে একটা পরিবর্তন এসেছে যে সেটা বুঝতে পারি। নিজেকে আয়নার সামনে দেখলে যেন চিনতেই পারি না। কিরকম একটা রোগা হয়ে গেছি। বলা ভালো, রুগ্ন হয়ে গিয়েছি।

অগ্নিভ চলে যাওয়ার পর থেকে কিছুই যেন ভালো লাগে না।

কোথাও না কোথাও নিজেকেই দোষী মনে হয় আমার। আমি ওর জীবনে না এলে হয়তো এরকম ঘটতই না।

------------------------------------------------------------------

Bạn đang đọc truyện trên: AzTruyen.Top