৩৩
ল্যাপটপের স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে আছে অয়ন।
মাত্রই একটা মেসেজ আসল ওর মেইলে। পাঁচ সেকেন্ড অপেক্ষা করল ও। তারপর ধীরেসুস্থে সেটা খুলল। কানাডিয়ান অ্যাম্বাসি থেকে একটা মেইল পাঠিয়েছে। অহনাকে খবরটা জানিয়ে ল্যাপটপ সাটডাউন করল ও।
এই মুহূর্তে মার কাছে ওর একবার যাওয়া উচিত। মা তার আদরের ছেলেটাকে ঠিক কতটা মিস করছে ওর চাইতে বেশি কেউ জানেনা। ধীর পায়ে মায়ের রুমের দিকে এগুলো সে।
ঘরে ঢুকতে গিয়ে রীতিমতো হোচট খাচ্ছিল অয়ন অন্ধকারে। ভাল করে তাকিয়ে দেখল আসমা তার ইজি চেয়ারে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। মাকে এরকম দেখে ও অভ্যস্ত না, ওর মা অনেক স্ট্রং। কিন্তু একটা মৃত্যু ওর মাকে দুমড়ে মুচড়ে শেষ করে দিয়ে গেছে... চোখটা চিক চিক করে উঠল অজান্তেই।
"আম্মু কী ঘুমিয়ে পড়েছ?" অয়ন আসমার পাশে গিয়ে দাঁড়াল।
"না, এদিকে আয়।"
আসমা আস্তে আস্তে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। এক ছেলে যখন আম্মু বলে ডাকে মন তখন পাগলা ঘোড়া হয়ে উঠে। মনে হয়, অরণ্য এখনি এসে পেছন থেকে চোখদুটো চেপে ধরবে... বড়ো ছেলেটার এই স্বভাব ছিল খুব।
"তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে আম্মু, তুমি প্লিজ প্রেশারের আর ঘুমের ওষুধটা খেয়ে নাও,"অয়ন মায়ের হাতের চুড়িটা ধরে ছোট বাচ্চাদের মতো নাড়াচাড়া করতে থাকে। ওর আসলেই খুব কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু সেই কষ্ট ও কারও সাথে শেয়ার করতে পারছেনা। আর যার সাথে কিছু না বলেই শেয়ার করতে পারতো সে আজ ওর ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
"খেয়েছি," আসমা হাসলেন। যদিও একফোঁটা পানি ঠিকই গাল বেয়ে নিচে গড়িয়ে পড়ল। "আমার কথা তোকে ভাবতে হবে না এখন। আমি ভাল আছি, তুই এখন থেকে তোর বউ এর কথা ভাব তাহলেই হবে।"
মায়ের কথা শুনে আসমার ইজি চেয়ারের পাশেই মাটিতে ধপ করে বসে পড়ল অয়ন। তোর বউ কথাটা শুনে বুকের ভিতরে কেমন যেন মোচড় দিয়ে উঠছে ওর , নিঝুমকে কী করে কষ্ট দেবে ও? আর অহনার সঙ্গে যোগাযোগটা ও চাইলেই ভাঙতে পারছেনা। নিজেকে পাগল পাগল লাগছে এখন ওর, বিয়ের খবরটা শুনে অহনার রিঅ্যাকশন কী হবে, কে জানে? বিয়ের সিদ্ধান্তটা হয়ে যাওয়ার পর থেকে ও ক্রমাগত চেষ্টা করেছে অহনাকে হার্ট না করে ব্যাপরটা বুঝিয়ে বলার, কিন্তু প্রতিবারই ও ব্যার্থ হয়েছে। এরমধ্যে যতবারই কথা হয়েছে অহনা ততবারই ওদের বিয়ের প্ল্যানিং করা শুরু করে আর ও বরাবরের মতো চুপ হয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
"আম্মু তুমি ঘুমাও প্লিজ, এভাবে তোমার শরীর খুব খারাপ করবে। আমি আর পারছি না আর
সহ্য হচ্ছে না।"
"আমার চিন্তা না করে তুই যেয়ে শুয়ে পর এখন। অনেক রাত হয়ে গিয়েছে , আর আমি এখানে শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টাই করছি।
তুই জানিস আজ অনেকদিন পর আমার মনটা একটু ভাল আছে। নিঝুমকে আজ বাড়ি আনতে পেরেছি, আমার অরণ্যর বাচ্চাটা এখন আমাদের কাছে আছে, আর কি চাই বল? এর চেয়ে বেশি আর কিছু চাওয়া এখন আমার আওতার বাইরে।"
"আম্মু তুমি এমন করে বলোনা, প্লিজ। আমার দমটা বন্ধ হয়ে আসে এমন কথা শুনলে,"অয়ন মায়ের হাতটা নিয়ে নিজের গালে চেপে ধরল।আজকে ওর ভাইটার জন্য বড়ো কষ্ট হচ্ছে, সাথে নিজের জন্যও।
"তুই প্লিজ নিঝুমকে দেখিস, আমার এই অনুরোধটা তুই রাখিস।"
মায়ের কথায় চুপ করে বসে থাকা ছাড়া আর কিছু করার নেই ওর। আম্মু অনেক কিছুই জানেনা আর ওর পক্ষে এখন আর কিছু জানানোও সম্ভব না। আর আম্মুকে এখন নতুন করে কষ্ট দেওয়ার কোনো মানে হয়না। ভাই হারিয়ে সেই ব্যাথা বইতে বইতে ও শেষ, জীবন এখন একটা রঙ্গমঞ্চ হয়ে গেছে ওর জন্য, এই অবস্থায় মা হারালে জীবন নরকের চেয়ে কম কিছু হবে না ওর জন্য। তারচেয়ে ওর যন্ত্রনা ওরই থাক। তার বিনিময়ে যদি ওর পরিবারের সবাই ভাল থাকে তো তাতেই ওর ভাল থাকা হয়ে যাবে।
" অ্যাই তুই উঠ.... গিয়ে শুয়ে পড়," আসমা তাড়া দিলেন ছেলেকে। সত্যি বিয়ে না হলেও একদম একটা সত্যি বিয়ের ধকলই বইতে হয়েছে আজকে সবাইকে।
"যাচ্ছি," অয়ন উঠে দাঁড়াল। এখন জোর করে হলেও ওকে ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে। না হলে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পাবনা মেন্টালে ওর স্থান হবে হয়ত। ফোঁস করে একটা শ্বাস ফেলল ও।
"দাঁড়া একটা কথা," আসমা আবার পিছু ডাকলেন ছেলেকে।
"কী আম্মু? " অয়ন ঘর থেকে বের হতে গিয়েও আবার ফিরে আসল।
"তুই নিঝুমকে নিয়ে কিছুদিনের জন্য বাইরে থেকে ঘুরে আয়।"
মায়ের কথায় অয়ন আকাশ থেকে পড়ল। নিঝুমকে নিয়ে এই অবস্থায় ও কোথায় বেড়াতে যাবে.. আর মা অ্যালাও করবে ওকে!
"কিন্তু আম্মু আমাদের তো বিয়ে হয়নি, নিঝুমকে এই অবস্থায় কী করে নিয়ে যাবো? সাথে ওর শারিরীক অবস্থাও তো তেমন ভাল না।"
" জানি, কিন্তু সেটা তো আমরা পরিবারের লোক ছাড়া কেউ জানেনা। আর নিঝুমের পরিবার তো সেদিনই পারলে তোর সাথে বিয়ে দিয়ে দিতো আর আমি তোকে নিজের চাইতেও বেশি বিশ্বাস করি বাবা। তুই থাকতে নিঝুমের কোনো রকম কোন ক্ষতি হবে না আমি নিশ্চিত,"আসমা কথাটা বলেই আবার শুয়ে পড়লেন।
অয়ন উত্তর না দিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল। আম্মু জানেনা আম্মুর কথাটা ওর জন্য কত আনন্দের, কিন্তু একই সাথে কত বড়ো দায়িত্বের। ওকি পারবে আম্মুর কথার সম্মান রাখতে?
........................................................
" পঁচা একটা লোক, এত রাত হলো তাও আসেনা,"নিঝুম বালিশে শুয়ে পড়ল। ওর এখন খুব ঘুম পাচ্ছে। কী যে একটা লোকের প্রেমে পড়ল ও... এক্কেবারে যা তা, বিয়ে করা বউ ঘুমে পড়ে যাচ্ছে আর ব্যাটা কোথায় মাছি মেরে বেড়াচ্ছে কে জানে।
"তোমার ঘুম আসছেনা?"
শব্দ শুনে ধড়মড় করে উঠে বসল নিঝুম।
"তুমি কই ছিলা এতক্ষণ? আমি কখন থেকে বসে আছি... অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়েই যাচ্ছিলাম," নিঝুমের মুখ অভিমানে ফুলে আছে।
নিঝুমের কথায় ঢোক গিলল অয়ন। নিঝুমের অভিমানে বুঁজে আসা মুখটা থেকে চোখ সরিয়ে নিল দ্রুত। প্রচন্ড এক অপরাধ বোধ কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে ওকে প্রতিনিয়ত। নিঝুমের সাথে কী বেশি অন্যায় করে ফেলল ও? পাগলামি কী দিন দিন বাড়ছে আরো? কান্না পাচ্ছে ওর, নিজেকে সামলানোর জন্যই আর বেশি সময় দাঁড়াল না ওঘরে, প্রায় দৌড়ে বের হয়ে আসল।
অরণ্য ওভাবে বের হয়ে গেল কেন? আজব তো! এই লোকের সেন্স দিনকে দিন শূন্য হয়ে যাচ্ছে, নিজের বাচ্চার চিন্তা করে খালি, বাচ্চার সাথে বাচ্চার মাও যে আছে তার কোনো খবর নাই। আর একদিন খাবারের খাওয়ার কথা বললে মেরে নাক ফাটিয়ে দেবে ও.. লোকটার। রাগ হয়ে গায়ের গয়নাগুলো সব ছুড়ে ছুড়ে বিছানায় পায়ের কাছে ফেলতে লাগল ও। কী করতে যে এগুলো পরেছিল ও," দুনিয়ার আজুরে জিনিস সব, আর কক্ষনো পরব না, কোনোদিনও পরব না, হাত পা ধরে অনুরোধ করলেও পরব না। "
অয়ন বালিশে মুখ গুঁজে দিয়ে শুয়ে পড়ল কিন্তু চোখ বন্ধ করলেই এখনও সেই বিভীষিকাময় মুহূর্তটা ওকে তাড়া করে বেড়ায়। ভাইটা তার মেঝেতে মুখথুবড়ে পড়ে আছে, লাল রঙের রক্তের একটা নদী বয়ে যাচ্ছে ওর আশপাশ দিয়ে। এক মুহুর্তের জন্য হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল সেদিন ও। সেই অভিজ্ঞতা, সেই ব্যাথা কারও সাথে শেয়ার করতে ওর খুব ইচ্ছে হয়, মনে হয় কারো কাঁধে মাথা রেখে একটু প্রান খুলে কাঁদে কিন্তু কার কাছে যাবে ও, মা -বাবা এমনিতেই অসুস্থ, আর নিঝুমের কাছে কী বলবে? নিঝুমের কাছে যাওয়ার মতো মনোবল নেই ওর।
ছাদের দিকে তাকিয়ে রাজ্যের আকাশ- পাতাল ভাবনা এসে ঢেউ তোলে, ভাবে নিঝুমের সাথে ওর তাহলে অনুষ্ঠানিকতা করে বিয়ে হয়েই গেলো। সবার কাছে আজ থেকে ওরা স্বামী - স্ত্রী। নিঝুমের উপর আজ থেকে ওর সব অধিকার আছে। একা একা এই সব চিন্তাগুলো কিছুতেই মাথা থেকে দূর হয়না ওর।
মানুষ ভাবে কী আর হয় কী।
অহনা কথায় কথায় প্রায়ই বলে,আমার লাইফের অভিজ্ঞতা হলো মেন অল আর হিপোক্রেট...আর সেই তালিকায় এখন অয়নের নাম সবার আগে।কিন্তু এখন অহনাকে কী বলবে ও, ওকে ভুলে যেতে? অহনা কি মানতে পারবে সেটা? মনে মনে কালই অহনার কাছে যাবার সিদ্ধান্ত নিল ও।
......................................................
"রায়হান সাহেব "
"জি "
"আপনি কী আজ একটু থানায় আসতে পারবেন? আমাদের আপনার ছেলে অরণ্য রহমানের মার্ডার কেসের বিষয়ে কিছু বলার আছে আপনাকে, সরাসরি।"
"আমাকে কখন আসতে হবে?"
" বেলা বারোটা থেকে দুইটার মধ্যে আসলেই হবে। এরচেয়ে বেশি দেরি হলে আবার আমাদের কাজের সমস্যা হবে, জরুরী একটা মিটিং ডেকেছি এই বিষয়ে।"
"আমি বারটার মধ্যে চলে আসব ইনশাআল্লাহ, আপনারা দুশ্চিন্তা করবেন না। "
" ধন্যবাদ।"
ফোন নামিয়ে রাখতেই রায়হান সাহেব আসমাকে পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন। আসমা ভয়ে সাদা হয়ে গিয়েছে।
"কী হলো আসমা ভয় পাচ্ছো কেন? "
"ওরা কী বলবে? দেখ।অয়নকে এর মধ্যে তুমি টেননা। আমার এক ছেলে আমি হারিয়েছি, আরেক ছেলেকে হারিয়ে একদম নিস্ব করে দিও না।"
"না আসমা ওরা অয়নকে নয় আমাকে ডেকেছে। তবে প্রয়োজনে অয়নকে তো যেতেই হবে থানায়, কোর্টে। অরণ্যর মার্ডারের সময় একমাত্র ওই ওর সাথে ছিল, তার উপর ও আবার ভিকটিমের আপন ভাই। কিন্তু আপাতত অয়নকে ওরা ডাকেনি।"
আসমা তার পরেও মুখ কালো করে দাঁড়িয়ে রইলেন। পুলিশ সংক্রান্ত কিছু শুনলেই ওনার এখন বুক কাঁপতে থাকে। অরণ্যর বাচ্চাটা ছেলে হোক বা মেয়ে, ওদের পুলিশের চাকরির ধার কাছেও যেতে দিবেন না তিনি। সোজা ইঞ্জিনিয়ার বানিয়ে এম.এস করতে পাঠিয়ে দেবেন দেশের বাইরে। আর কাউকে হারানোর সাহস ওনার নেই।
রায়হান সাহেব ধীরে ধীরে বারান্দার দিকে এগুলেন। গোসল সেড়ে তিনি থানায় যাবেন কিন্তু তার আগে নিঝুমের সাথে একটু কথা বলবেন। মেয়েটা তার পরিবারের জন্য অনেক অশান্তি ভোগ করছে অথচ এটা ওর পাওনা ছিল না।
..................................................
নিঝুম সকালে ঘুম থেকে উঠে হেসে ফেলল। অরণ্য সোফায় লম্বা হয়ে কেন ঘুমাচ্ছে কে জানে... নিঝুম আস্তে আস্তে উঠে ওর পাশে গিয়ে বসল। দাঁড়া ব্যাটা তোর ঘুমের আমি যদি চৌদ্দটা না বাজাই তো আমার নাম নিঝুম না। বউ ফেলে সোফায় ঘুমানোর মজা বের করবে ও।
শাড়ির কোনটা পেঁচিয়ে লম্বা করে অরণ্যর নাকের মধ্যে ঢুকিয়ে হালকা নাড়াচাড়া করতেই, "হ্যাচ্চো" বলে লাফিয়ে উঠল অরণ্য।
পরপর তিন চারটা হাঁচি দিয়ে নাক মুখ লাল করে দাঁড়িয়ে রইল অরণ্য। অরণ্যর নাক এমন লাল হয়ে গিয়েছ যে নিঝুমের মনে হচ্ছিল ওটা বুঝি একটা লাল মূলো। খিলখিল করে হেসে ফেলল ও হাসি আটকাতে না পেরে।
নিঝুমকে এমন হাসতে দেখে অয়ন কী বলবে বুঝতে পারলনা। মেয়েটার মাথা কী একেবারেই গেল? কথা নেই বার্তা নেই ওর নাকে এসে কী ঢুকিয়ে বাচ্চাদের মতো দুষ্টামী করছে, আবার খিলখিল করে হাসছে। তবে ওকে অনেকদিন পর এরকম করে হাসতে দেখল ও, কী প্রানবন্ত হাসিটা... মনটা ভাল হয়ে গেল ওর মুহূর্তের মধ্যে।
"আমাদের ঝুমঝুমিটা এত খুশি কেন জানতে পারি? "
ঝুমঝুমি নামটা শুনে কেমন যেন থমকে গেল নিঝুম। সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল কিছু সময়।
"তুমি মিথ্যা বলছ।"
"মানে? "
"মানে, তুমি আমাকে ঝুমঝুমি ডেকে আবার আগের বারের মতো বোকা বানানোর চেষ্টা করছো। কিন্তু আমি এতো বোকা নই। আমি আমার অরণ্যকে চিনি। তুমি চাইলেই আমার সাথে বুদ্ধিতে পারবেনা।"
নিঝুমের কথায় হালকা একটা হাসি উঁকি দিয়েই আবার মিইয়ে গেল,"আসলেই তোমার মতো বুদ্ধিটা আমাদের যে কেন নেই ঝুমঝুমি।"
"আবার... খবরদার আমার সামনে অয়ন সাজার চেষ্টা করবে না। আমার অরণ্য বেঁচে আছে আমি জানি।"
"হুমম... আছে তো। এই তো তুমি ওকে কত যত্ন করে তোমার পেটের মধ্যে বাঁচিয়ে রেখেছ। একটু একটু করে অরণ্য আবার বড়ো হচ্ছে প্রতিদিন।"
অয়নের কথা শুনে খুশি হয়ে গেল নিঝুম," সত্যি.. তাই না বল। আচ্ছা ও একদম অরণ্যর মতো হবে তাই না? "
"হমম.. তাই। "
"তাহলে তো ও তোমার মতোও হবে বলো? "
"হ্যাঁ, তাও হবে। আমিও তো বাবা হই এখন। "
"ও... আচ্ছা তুমি এই ঘরে কী করছিলে? তোমার তো একটা ঘর আছে, তোমার সেই অহনা কই? ও আসবেনা আমাকে দেখতে? আমি যে বউ হয়ে আসলাম তোমাদের বাড়ি।"
"আসবে," অহনার কথায় একটু চুপসে গেল অয়ন।
"কবে? আচ্ছা আমরা অয়নের বিয়েতে ঘোড়ার গাড়ি ভাড়া করব হ্যাঁ... অনেক মজা হবে। "
অয়নের মনে হলো ওর মাথা গোলাচ্ছে। নিঝুম সব উল্টাপাল্টা করছে। ওকে ওষুধ দিতে হবে।না হলে এরকম আবোলতাবোল বকতে থাকবে আর ওর মাথা খাবে। নিঝুম খুব দ্রুত একবার অরণ্য আর অয়নের মধ্যে গুলিয়ে ফেলছে, এরকম হলে একটু পরে খুব উত্তজিত হয়ে যায়, তারপর সেন্সলেস হয়। খুব দ্রুতই নিঝুমকে আবার ডাক্তারের কাছে নিতে হবে।
অয়ন তাড়াতাড়ি মাকে ডাকতে যাচ্ছিল কিন্তু নিঝুম পিছন থেকে ওর গেঞ্জি খামচে ধরাতে অয়নকে থামতে হলো।
"আবার কী হলো? "
"কিছু না... এদিকে ফেরো," অদুরে স্বরে বললো নিঝুম।
"কেন মুখে বললে হয় না?" অয়ন ঘুরতে ঘুরতে জানতে চাইল।
শোনার আগেই উত্তরটা পেয়ে গেল অয়ন। পায়ের পাতায় ভর দিয়ে ততক্ষনে ওর মুখের নাগাল পেয়ে গেছে নিঝুম। পাগলের মতো হামলে পড়ে ওর নাকে মুখে ক্রমাগত চুমো খাচ্ছে সে।
চলবে..............
Bạn đang đọc truyện trên: AzTruyen.Top