১৮. ওমেগার জালে আবদ্ধ আঁখি
আবীর নিঃশ্বাস বন্ধ করে তাকিয়ে আছে তার হাতের উপর ভর দিয়ে শুয়ে থাকা জ্ঞানহীন আঁখির দিকে। তার হাতের উপর থেকে আঁখির শরীর ধীরে ধীরে মিশে যাচ্ছে বায়ুতে।
ওমেগা আঁখিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে ভিন্ন কোন সময়ের প্রবাহে। অতীতে দাঁড়িয়ে সময়ের ফাঁদ পেতে সে আঁখিকে সময়ের জালে বিঁধে ফেলেছে নিশ্চিত।
একটু একটু করে তার শরীরের প্রতিটা কণা উবে যাচ্ছে শূন্যে। আবীর উন্মাদের মত ছুটে যেতে থাকে। ছুটে যেতে থেকে উল্কার গতিতে, ছুটতে থাকে বিদ্যুতের গতিতে...
ছুটতে থাকে মহা বিশ্বজগতের এক অঞ্চল থেকে ভিন্ন অঞ্চলে। কখনো এক গ্যালাক্সি থেকে অদৃশ্য হয়ে সে দৃশ্যমান হতে থাকে অপর কোন গ্যালাকটিক নক্ষত্রের চারিদিকে আবর্তনরত কোনো অচেনা ভিনগ্রহতে।
ক্ষুদ্র পরমাণুতে বিভক্ত হয়ে লাফিয়ে চলতে থাকে এক ডাইমেনশন থেকে ভিন্ন কোন ডাইমেনশনে। কোয়ান্টাম ওয়েভ হয়ে হাজারো মেমব্রেনকে অতিক্রম করে ভিড়তে থাকে এক প্যারালাল জগত থেকে ভিন্ন কোন প্যারালাল জগতের অন্দরে।
কিন্তু তবু তারা ওমেগার জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে পারেনা কিছুতেই। সময়ের নিষ্ঠুর জাল থেকে মুক্তি পাওয়ার ক্ষমতা কি কোনো মানুষের আছে? ওমেগা আঁখিকে অতীতে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সময়কে ফাঁকি দিয়ে একটুখানি অতীতে ফিরে যাওয়ার পথ আবীরের জানা নেই।
আবীর থমকে দাঁড়িয়ে যায়। নিরাশায় তার বুক ভারী হয়ে যায়। মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম ছুটতে থাকে। আর ছুটে লাভ নেই। ছুটতে ছুটতে সেও ক্লান্ত ভীষণ। আঁখি বর্তমান থেকে পুরোপুরি উধাও হয়ে পৌঁছে গেছে অন্য কোনো সময়ে। কোনো দূর অতীতে।
আবীর যখন এখানে হতবিহবল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছে, ঠিক তখন তার অপর সত্ত্বা ছুটে গেছে নেগেটিভ ইউনিভার্সের দিকে। সময়ের মূল ম্যাকানিজম অংশে।
সেখানেও সে প্রাণপণ চেষ্টা করছে সময়ের চাকা ঘুরিয়ে দিতে। কিন্তু বিশ্ব-ব্রক্ষ্মান্ডের সময়ের চাকা নিয়ন্ত্রণের পথ যে তার জানা নেই। আঁখিকে ফিরে পেতে যে সময় কে তার নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে সেখানে আঁখির দ্বৈত সত্ত্বার সৃষ্টি হয়েছে। একই সময়ের মাঝে দ্বৈত সত্ত্বার জটিলতায় এক ভয়াবহ নতুন সমীকরণের সৃষ্টি হয়েছে। সে জটিলতা ঢাকতে প্রকৃতি সময়ের চাকা জ্যাম করে দিয়েছে। সে সমীকরণ ভেঙে আঁখিকে উদ্ধার করার ক্ষমতাও যে আবীরের জানা নেই!
সে সময়ের আদ্যপ্রান্তে আর কেউ প্রবেশ করতে পারবেনা। প্রকৃতি নিজের নিরাপত্তার জন্য সে পথ বন্ধ করে দিয়েছে।
ওমেগার ছোট্ট জালে তাই অসহায়ের মত বাধা পড়ে গেলো আঁখি অনির্দিষ্টকালের জন্য।
সেই নিষ্ঠুর পিশাচ ওমেগা কি তাকে বাঁচিয়ে রাখবে? যার হৃদয়ে একটুকরো দয়া নেই, মায়া নেই, মমতা নেই, এক বিন্দু ভালোবাসা নেই তার তো আঁখিকে বাঁচিয়ে রাখার কোনো কারণ নেই!
আবীর তার জীবনে এর চেয়ে অসহায় আর কখনো অনুভব করেনি। এক ভয়ংকর বিষাদ এক অনুভূতি তার প্রতিটি অণু পরমাণুতে ছড়িয়ে পড়ছে। এক ঘোর অমানিশায় তার পৃথিবী বিদীর্ণ হয়ে যেতে থাকে এক নিমিষেই।
তবু আবীর হার মানতে চায়না কিছুতে। হাঁটু গেঁড়ে বসে স্নিগ্ধ ঘাসের উপর। পকেট মুঠো করে বেরিয়ে চোখের সামনে এনে ধরে থাকে তার তৈরি "টেলি ইলেক্ট্রোড মাল্টি মাইন্ড কানেক্টর"।
মহাবিশ্বের সময়ের কোডকে ভাঙার জন্য তার প্রয়োজন অসীম বুদ্ধিমত্তা। একটি বিশালাকার সম্মিলিত বুদ্ধিমত্তার অসীম সংযোগ। এর জন্য তাকে সেক্রিফাইজ করে দিতে হবে হাজারো আবীরের জীবন। তাদের মস্তিক ভেঙে বের করে আনতে হবে তাদের মস্তিষ্ক। সে সংযোগে তৈরি হবে এ মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় নিউরাল নেটওয়ার্ক। তাতে বিপন্ন হবে বহু আবীরের জীবন। কিন্তু এ ছাড়া যে আর কোনো উপায় নেই.... সত্যিই আর যে কোনো উপায় জানা নেই তার!!
continued to..
next part... :)
Go to next page>>>>>>
hey, feel free to vote & *comment* :D
Thanks for you patience for such a long time.
....
Bạn đang đọc truyện trên: AzTruyen.Top