১৫

#অভিসারক_ও_অভিসারিণী
লেখা #AbiarMaria

#১৫

ফারহা জামানের প্রস্তাব শুনে তব্দা খেয়ে আছে। এই কথা জামান বলেনি, অসম্ভব। ফারহা চোখ বন্ধ করে মাথা ঝাঁকি দিল। চোখ খুলে আবিষ্কার করল, জামানের মুখ এখনও ওর মুখের সামনে। জামানের দুচোখ এখন ওর ঠোঁটের উপর নিবদ্ধ। এমন নির্লজ্জ আচরণ জামান করবে, তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারে নি। এত বিশ্বাসের শেষ মেশ এই মর্যাদা দিল জামান?! এত ভালো ব্যবহারের পেছনে লোভ ছিল ফারহাকে অনৈতিক ভাবে পাওয়ার? নোংরা কথা বলার আগে জামানের একবারও বুক কাঁপলো না? ফারহাকে কি আর দশটা সস্তা মেয়ে মনে হচ্ছে ওর কাছে? শুধুমাত্র ওর বাসায় থাকছে বলে?! ফারহার পায়ের রক্ত মাথায় উঠে গেল। গলা ফাটিয়ে জামানের মুখের উপর চেঁচিয়ে উঠল।

"কি মনে হয় আমাকে? সস্তা? কদিন একটু অসুস্থ হয়ে পড়লাম বলে একেবারে কিনে ফেলেছেন মনে হয় যেন? এই রকম নোংরা কথা বলার আগে মুখ থেকে জিভটা খসে পড়ল না, হ্যাঁ? খুব তো সবার সামনে চরিত্রবান সেজে বসে থাকেন! ভেতরে ভেতরে লিভ টুগেদারের চিন্তা করেন, না? শোনেন জামান ভাই, মনে করবেন না যে অসুস্থ বলে কিচ্ছু করতে পারব না! আমি কিন্তু কলেজে থাকতে জুডো প্র‍্যাক্টিস করতাম। আপনি একটা ছেলে মানে গায়ের জোরে পেরে যাবেন, একদম এমনটা ভাববেন না! এক ঘুসিতে আপনার চোয়াল আলগা করে ফেলতে পারব আমি!"
জামান হাসি হাসি মুখে বলল,
"তুমি শিওর যে এক ঘুসিতেই আমার চোয়াল আলগা হবে? এত সহজ? ঠিক আছে, একটা ঘুসি মারো। একটায় যদি কাজ না হয়, তাহলে কিন্তু ডিপ ফ্রেঞ্চ কিস দিব তোমাকে!"

জামানের দুচোখে কৌতুক খেলছে। আর ফারহার দুচোখে আগ্নেয়গিরির ভয়ানক আগুন, যেন কোনো মুহূর্তে প্রচন্ড শব্দে বিস্ফোরণ হয়ে তা জামান আর তার সাজানো বাসাটা চুরমার করে দিতে পারে। ফারহা দুই হাতে জামানের বুকে প্রচন্ড জোরে ধাক্কা দিল। যদিও ফারহার মনে হচ্ছিল ও অনেক জোরে ধাক্কা দিয়েছে, অথচ জামান সেই তুলনায় সামান্যই নড়ল। ফারহা দ্বিতীয়বার আরও জীরে ধাক্কা দিল। এবারও জামান ফারহার ধাক্কার তুলনায় কমই নড়ল। ফারহা ভেতরে ভেতরে শংকিত হয়ে উঠেছে, জামান ওকে পেচিয়ে ধরলে ও কোনোভাবে পালাতে পারবে না। জামানের মত শক্ত সামর্থ ছেলে, যে কিনা নিয়ম করে জীম করে, তার সাথে গায়ের জোরে সে পারবে না। ফারহার ভেতরে ভয় চলে আসছে। নাহ, কোনোভাবেই মুখে ভয়ের ছাপ ফেলা যাবে না। জামানকে বুঝতে দেয়া যাবে না ওর মনে কি চলছে।

এদিকে জামান তাচ্ছিল্য করে বলল,
"গায়ের জোর মাত্র এটুকু? বললাম ঘুসি দিতে, অথচ শুধু দুটো ধাক্কা দিয়েছ, তাও আবার পুরোপুরি নাড়াতেও পারোনি! একটা ঘুসি সমান দুবার ধাক্কা। ওকে, এবার তাহলে আমার অভিপ্রায় পূরণ করতেই হয়!"
জামান ফারহার আরও কাছে মুখ এগিয়ে আনতেই ফারহা সরে যাবার চেষ্টা করল। জামান এবার ওর আরেক পাশে হাত দেয়ালে ঠেকালো। ফারহা এখন জামানের ট্রাপে বন্দি। ও চাইলেও পালাতে পারবে না। যা করতে হবে গায়ের জোরে করতে হবে। ফারহার ভেতর থেকে বাঘিনী বেরিয়ে এলো। ওর শরীরের প্রতিটি কোষের মাইটোকন্ড্রিয়ায় পৌঁছে গেছে সমস্ত শক্তি, ফেটে পেড়ছে সেগুলো ক্রোধের উত্তাপে! ফারহার চোখে এখন পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াবহ আগ্নেয়গিরি, আর তাতে অগ্নি স্ফুলিঙ্গ উপচে পড়ছে। খপ করে ফারহা জামানের কলার চেপে ধরল দুই হাতে।

"কি সমস্যা, হ্যাঁ? সাহস বেড়ে গেছে অনেক! কামড়ে মাংস তুলে ফেলব আমার কাছে আসলে! গায়ের জোর দেখানো হচ্ছে আমাকে?! আমাকে এত দুর্বল ভেবে একেবারে ভুল করবেন না! গলা ছিড়ে রক্ত খেয়ে নিব আমি আপনার!"

ফারহার চিৎকারে জামানের কানের পর্দা ব্যথা করার কথা! জামান এক হাতে কান চেপে আরেক হাতে ফারহার হাত ছাড়িয়ে কিছুটা সরে দাঁড়ালো। একেবারে স্বাভাবিকভাবে চুলোর কাছে গিয়ে মুরগির ঢাকনা সরালো। লোভনীয় একটা ঘ্রাণ চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। জামান স্পেচুলা নিয়ে সেখান থেকে সামান্য একটু হাতে নিয়ে জিভে ছোঁয়ালো। ফারহার দিকে ফিরে বলল,
"খেয়ে দেখো তো মশলা ঠিক আছে কিনা!"

ফারহা রাগে জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলছে। ওর বিশ্বাস হচ্ছে না, একটু আগে বাজে প্রস্তাব দেয়া মানুষটা তাকে খাবার চেখে দেখতে বলছে। এই লোক কি নির্লজ্জ? নাকি অসভ্য? নাকি বর্ণচোরা?! না হয় মিনিটে মিনিটে তার রূপ বদলাবে কেন?! জামানের স্বাভাবিকতা দেখে মনে হচ্ছে ওর পেটের ভেতর বদহজম হচ্ছে। সে রেগে জামানের চোখে চোখে চেয়ে থাকলো। জামান এগিয়ে এসে ওর হাত টেনে নিয়ে তাতে ঝোল দিয়ে বলল,
"টেস্ট করে বলো তাড়াতাড়ি। আমার কাছে কিন্তু আমারটা ভালোই লাগছে, তোমার কাছে ঠিক আছে কিনা দেখো। লবণ কি আরও হবে? নাকি আরেকটু ঝাল দিব?"

ফারহা চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
"মন চাচ্ছে আপনাকে গলা টিপে মেরে ফেলি! একটু আগে আমার সাথে অসভ্যতা করার জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছিলেন, আর এখন খাবার টেস্ট করাতে! সমস্যা কি আপনার? আমার সাথে পায়ে পা বাঁধিয়ে ঝগড়া করার জন্য কি পেটের ভেতর যন্ত্রণা উঠে গেছে?!"

জামান হেসে ফেলল। মুরগি নাড়তে নাড়তে বলল,
"এখন তোমাকে ফারহা লাগছে। গত তিনদিন ধরে  যেভাবে জ্বর আর বমির কারণে ঢুলছো, মনে হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে ফারহা চৌধুরী না, একটা রানিক্ষেত হওয়া মুরগী আমার ঘরে ঢুকে গেছে! লিটারেলি আই ওয়াজ থিংকং, হু ইজ দিস! এইটা কি ফারহা নাকি? অসম্ভব! শোনো মেয়ে, তোমাকে এভাবেই মানায়। কখনো কাউকে মারবে, চিৎকার করবে, কলার চেপে ধরবে, হুমকি দিবে, ঘুসি দিবে, শরীরের জোর না থাকলেও কাপড় গুটিয়ে মারামারিতে নেমে যাবে, নির্লজ্জের মত অসভ্য প্রস্তাব দিবে, এটাই তো আসল তুমি! তোমার সত্যিকারের চরিত্রকে বাইরে আনতেই একটু অসভ্য অসভ্য কথা বলতে হলো আমাকে। ডোন্ট ওরি, আম নট গনা কিস ইউ! সেই শখ থাকলে অনেক আগেই মিটিয়ে ফেলতাম। কিন্তু কয়েক দিনের মাঝে নিজেকে কোথায় হারিয়ে ফেললে শুনি? এত দুর্বল হয়ে গেলে কেন? হু?"

জামান ফারহার দিকে চেয়ে আছে। ফারহার ফর্সা গাল আরক্তিম হয়ে উঠেছে। জামানের পুরোটাই প্র‍্যাঙ্ক ছিল, এটা বুঝতে ওর কয়েক সেকেন্ডই লেগেছে। ও এত বোকা কেন? কি করে ভাবলো জামান ওর সাথে অন্তরঙ্গ হতে চাইবে? যেখানে ফারহাকে দুর্বল অবস্থায় পেয়েও ওর শরীরের কোনো অঙ্গে অপ্রীতিকর ভাবে হাত রাখে নি, সেখানে এখন কয়েক সেকেন্ডে ওর ইজ্জতভ্রষ্ট করবে, এমন চিন্তা কি করে ওকে গ্রাস করল? লজ্জা আর অনুতাপে গালের সাথে সাথে ওর কানও লাল হয়ে যাচ্ছে। জামান হেসে বলল,
"থাক, তুমি এখনো দুর্বল আছো, রাগ দেখিয়ে আর ক্যালরি খরচ করতে হবে না! যাও, বিশ্রাম করো। আমিই বাকি কাজ করে নিব"

ফারহা সন্তর্পনে সেখান থেকে সরে তার ঘরের দিকে রওনা দিল। জামান পেছন থেকে ফারহাকে ডাকলো। ফারহা ঘুরে তাকানোর পর খুব সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলল,
"এখন থেকে রাতে সবসময় দরজা আটকে ঘুমাবে। হাজার হোক, রাত বিরাতে যৌবনের তাড়নায় তোমার ঘরে ঢুকে গেলেও যেতে পারি!"
ফারহা আবারও আগের মত রেগে গিয়ে ঘরে ঢুকে শব্দ করে দরজা লাগিয়ে দিল। অপর দিকে জামান মুখে হাত দিয়ে শব্দ করে হাসি আটকানোর চেষ্টা করছে। ফারহাকে আচ্ছামত ট্রিগারড করে ফেলা গেছে। এই মেয়ে এখন রেগে মেগে একা একা ওকে বকতে থাকবে! ফারহা জানে না, জামান এই রাগী, পাগলাটে, মেজাজী, মারকুটে ফারহাকেই বেশি ভালোবাসে। জীবনে সব যেমন চিনির মত মিষ্টি হলে চলে না, মাঝে মাঝে শুঁটকি ভর্তা কিংবা কঠিন চিলি ফ্লেইক্স লাগে; জীবনে সব সুস্থ মানুষের পাশাপাশি দুচারটা পাগলেরও দরকার হয়! জামান ফারহাকে ক্ষেপিয়ে দিয়ে যারপরনাই উচ্ছ্বসিত হয়ে আছে। আপন মনে সে রান্নার কাজটা করছে।

বেশ কিছু সময় পর জামান ওয়াশিং মেশিন থেকে কাপড় বের করতে শুরু করল। এর মুখ খুলেই কিছুটা থমকে গেল। উঠে দাঁড়িয়ে জোরে জোরে ফারহাকে ডাকতে শুরু করল। ফারহা বিরক্ত হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসলো।
"এরকম ষাঁড়ের মত চেঁচিয়ে কি উদ্ধার করতে চাচ্ছেন? নাকি এখন গলার জোরে ঘরের সব কাঁচ ভাঙার প্রস্তুতি নিচ্ছেন?!"
"বেশি কথা বলে নিজের কাপড় গুলো বের করে নাও!"
ফারহা বিরক্ত হয়ে বলল,
"এইটার জন্য ষাঁড়ের মত চেঁচানো লাগে? নিজের গুলো বের করেন, তারপর আমার গুলো আমি নিয়ে নিব"
জামান ওর দিকে চেয়ে চোখ গরম করল।
"তোমাকে বলেছি আগে তোমার কাপড় নাও! এত বেশি বুঝো কেন মেয়ে? একটা কথা বললে কথা কানে যায় না? আগে তোমার গুলো বের করো!"
"কেন?! কে আপনি যে আপনার সব কথা আমাকে বিনা বাক্যব্যয়ে শুনতে হবে, হ্যাঁ? আমার সাথে যখন যা মন চায় ব্যবহার করবেন, আর আমি মেনে নিব কেন?!"
"তুমি একেবারে বেশি কথা বলো! আমি যাচ্ছি, এর মাঝে সব বের করে যাও। নাহলে আমি এসে তোমার কাপড় পেলে সব ছুড়ে রাস্তায় ফেলে দিব!!"

জামান বিরক্তিতে ভ্রু কুঁচকে সেখান থেকে চলে গেল। ফারহা ওকে দুটো গালি দিল মনে মনে। কল্পনায় জামানের চুল ছিড়ে চুলের গুষ্টি উদ্ধার করতে করতে ঝুঁকে কাপড় বের করার জন্য উঁকি দিল। ভালো করে কাপড় গুলো দেখতেই চমকে উঠল। এই জিনিস এখানে কি করে এলো?! এতগুলো কাপড়ের মাঝে কখন ও ওর ব্যক্তিগত গোপন গার্মেন্ট দিয়ে বসে আছে, নিজেরও খবর নেই। এজন্যই জামান ক্ষেপে গেছে। জামানের কাপড়ের সাথে এইসব কাপড় দেয়ার মানেটা কি? তাই তো? ফারহা জিভ কামড়াচ্ছে বসে বসে। জামানের সামনে ওর আর ইজ্জত থাকলো না। এমনিতেই মাঝে মাঝে ওর অনুভূত হয়, একটা মানুষ অপরিচিত কারো সামনে বস্ত্রহীন অবস্থায় অবস্থায় থাকলেও ততটা লজ্জা পাবে না যতটা লজ্জা ফারহার পাওয়া উচিত জামানের সামনে। এখন আবার এসব! ফারহা বিড়বিড় করল, "আল্লাহ, আর কত কি হবে? আর কি কি বেইজ্জতি হওয়া বাকি আছে আমার? ছিঃ ছিঃ ছিঃ"

কাপড় বের করতে দেখল, কয়েক পিস ব্যক্তিগত গার্মেন্ট এখানে চলে এসেছে। ভাগ্যিস জামান ডেকে ওকে নিজের জিনিস নিয়ে যেতে বলেছে! ছেলের চক্ষুলজ্জা আছে। অথচ ও শুধু শুধু বোকার মত তর্ক করে যাচ্ছিল। কোনোমতে নিজের সব কাপড় বের করে নিজের ঘরে গিয়ে দরজা আটকে দিল। মনে মনে আচ্ছামত নিজের কপালকে গালি দিল। কোন দুঃখে যে আমেরিকা জামানের কাছে এসেছিল ও!!!

১১টার দিকে জামান ওর দরজায় নক করল। জামান টেবিলের দিকে ইশারা করে বলল,
"খেতে আসো। খেতে খেতে জরুরী কিছু কথা হবে"

খেতে বসে জামান বলল,
"আজকে যেহেতু উইকেন্ড, সো আমি তোমাকে নিয়ে এক যায়গায় যাবো। ওখানে গেলে ভালোও লাগবে, এক্সাইটিং ও লাগবে। তোমার সুস্থতার জন্য বেরোনো দরকার"
ছাই চাপা আগুনের মত ফারহার ভেতরের রাগটুকু না চাইলেও বেরিয়ে এলো। চাপা কন্ঠে বলল,
"আমাকে নিয়ে আপনার এত চিন্তা ভাবনা করতে হবে না৷ আপনি নিজেকে নিয়েই ভাবেন"
"লিসেন এরোগেন্ট গার্ল, এখানে তুমি আমাকে গাইড হিসেবে চেয়েছ, আশ্রয় চেয়েছ, সব দিচ্ছি। বাট রিমেম্বার, নাথিং ইজ ফ্রি ইন দিস ওয়ার্ল্ড! আমার দাম আমি ঠিকই বুঝে নিব। এরপরও যদি মনে হয়, দুই মাসের ভ্যাকেশন এই চার দেয়ালের মাঝেই কাটিয়ে দিবে, তাহলে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই। কিন্তু আমি ঠিকই আমার পেমেন্ট এই দেশ থেকে যাওয়ার আগে বুঝে নিব। সে তুমি বের হও, কিংবা না!"

ফারহার মনে মনে জেদ চেপে যাচ্ছে। জামানের এত তেজ তো আগে নজরে আসেনি! এই লোক নিশ্চয়ই ওকে একা পেয়ে তেজ দেখাচ্ছে। ঠিক আছে, সময় সবারই আসবে, তখনই দেখা যাবে রিভেঞ্জ কাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি!

খাওয়া শেষে জামান তাড়া দিতে থাকলো ফারহাকে তৈরি হওয়ার জন্য। ফারহা তৈরি হয়ে জামানের সামনে আসার পর জামান বিরক্ত হয়ে তাকালো।
"এগুলো কি পরছ তুমি?"
"কি? আমি এই ড্রেসে যাবো, এজন্য এটা পরেছি! এটা পরে ছবি অনেক ভাল আসবে"
"আমরা যেখানে যাচ্ছি, সেটায় ছবি তুলতে যাচ্ছি না। আমরা এক্সাইটেড কিছু করতে চাচ্ছি। ক্লাউনের মত লক্কর ঝক্কর কাপড় বদলে জিন্স আর বড় কোট পরে আসো! বাইরে কি পরিমাণ ঠান্ডা তোমার খবর আছে?"
"তাই নাকি? আমি তো বাহিরে যাই না, তাই খবরও রাখি না! যে যায়, তার খবর রাখলেই হবে!"
"বেশি কথা বলো তুমি ফারহা! সময় নষ্ট করছ। ওখানে গেলে এই কথা বলে সময় নষ্ট করার জন্য আফসোস হবে তোমার!"
"যথা আজ্ঞা হুজুর!"
ফারহা ভেংচি কেটে আবার ঘরে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল। জামান জোরে জোরে বলল,
"আর হ্যাঁ, ভারী প্যান্ট পরে নিও! পাতলা একটা না!"
ফারহা দরজা খুলে মাথা বের করে উঁকি দিল।
"কেন? ভারী প্যান্ট পরতে হবে কেন? আমার প্যান্ট মাঝ রাস্তায় ছিড়ে যাবে বলে ভয় পাচ্ছেন? ওসব সস্তা দুই নাম্বারি প্যান্ট আমি কিনি নি, ওকে?!"
"ঠিক আছে, খুব দামী প্যান্ট কিনে উদ্ধার করেছ আমাকে। কিন্তু যেটা বললাম, শুনো। ভারী জিন্স না পরলে ইউ উইল ক্র‍্যাক ইউর বাট!"

জামান দাঁত কেলিয়ে হাসছে, আর ফারহার ওদিকে পিত্তি জ্বলে যাচ্ছে। দুম করে দরজা আটকে কাপড় বদলাতে বদলাতে বলল,
"মিস্টার জামান, ইউ উইল রিগ্রেট এভ্রি সিঙ্গেল ওয়ার্ড ইউ সেইড টুডে! আজকে কে 'বাট ক্র‍্যাক' করবে, সেটা সময় হলেই টের পাওয়াবো তোমাকে!
জামান রে জামান,
আজকে তোকে কুচি কুচি করে কেটে করে দিব সমান!"

চলবে...

Bạn đang đọc truyện trên: AzTruyen.Top