♧ দুই ♧

সাতদিন পার হয়ে গেছে ।আব্দুল মোক্তার তার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া মিটে যাওয়ার পর থেকে সব আবার আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে গেছে ।

আসলে ঝগড়াটা খুব তুচ্ছ কারণেই হয়েছিল। তাই আব্দুলও লজ্জিত ।

স্ত্রীর সাথে বোঝাপড়া হওয়ায় তাদের সম্পর্কটা আরো সুন্দর হয়ে গেছে । তার ছেলেটা বড় দুষ্টু ।ভাবছে ছেলের সাথে একটু কড়া হতে হবে। কিন্তু ছেলের দুষ্টু-মিষ্টি হাসি দেখলে মনটাই গলে যায় ।কড়া হবে কি করে !

আজও সে ছেলেকে ঘুম পাড়াবে।একমাস ধরে করতে করতে অভ্যেস হয়ে গেছে ।

ছেলেকে নিয়ে শুয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ।ছেলেটাই তাদের দাম্পত্যজীবনকে টিকিয়ে রেখেছে ।সে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ।

তখনই ছেলেটা উঠে বলে, "বাবা, বাবা।"

"কি হয়েছে ?"

"দেখ তো, খাটের নিচে ভূত আছে কি না?"

"ভূত বলতে কিছু নেই, বাবু। এবার দুষ্টুমি না করে ঘুমিয়ে পড়ো দেখি।"

কিন্তু ছেলে তার নাছোড়বান্দা ।কান্না জুড়ে দিল,"না,দেখনা।আমার ভয় করছে।"

ছেলে তার হাত ধরে টানতে থাকে।নিরুপায় হয়ে বলে,"আচ্ছা! আচ্ছা বাবা! দেখছি!"

ছেলেকে বোঝানোর জন্যই খাটের নিচে ঝুঁকে তাকালেন কিন্তু যা দেখলেন ......তা....

খাটের নিচে তার ছেলে বসে আছে!

ও খুব ভয় পেয়েছে, চেহারা আতঙ্কিত ।ও তোতলাতে তোতলাতে বললো,"বা-বাবা! খাটের উপর কে যেন আমার মতো দে-দেখতে বসে আছে!"

আব্দুল ঢোক গিললেন ।তার সমস্ত শরীরের লোম খাড়া হয়ে গেল । শিরদাঁড়া দিয়ে আতঙ্কের ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল।

সে খাটের উপর তাকাল।উপরে বসে থাকা ছেলেটি বললো, "বাবা ভূত কি খাটের উপর নাকি নিচে?"

বলেই সে ফিক করে হেসে দিল। হাসির খান খান আওয়াজ দেওয়ালে বাড়ি খেতে লাগলো।

আব্দুল এক লাফে কয়েক পা পিছিয়ে গেল ।চোখে মুখে অন্ধকার ।খাটের নিচে যে সে যদি তার ছেলে হয় তাহলে খাটের উপরে এটা কে?

এবার খাটের নিচে থাকা ছেলেটি উঠলো।দুইজন একসাথে দাঁড়িয়ে আস্তে আস্তে তার দিকে এগিয়ে এলো।

দুইজনই বললো,"বাবা, আমি তোমার ছেলে "

আরো কাছে... আরো কাছে ...চলে এলো।আব্দুল পেছনে যেতে লাগলো। তখনই পিছন থেকে এক নারী হেঁটে এলো। নীল শাড়ি, খোলা এলোমেলো চুল।হাতে দীর্ঘ ও ধারালো ফলার ছুরি। চেহারায় নিষ্ঠুর হাসির ছাপ। আব্দুল মোক্তারের স্ত্রী ।

ছেলে দুটি আর নারী একে অপরের দিকে তাকালো।আর এবার তিনজন মিলে পিশাচে মতো হাসতে লাগলো। আব্দুল যেন ভাষা হারিয়ে ফেলেছে । আর তাদের হাসির শব্দে জানালার কাঁচগুলো ভেঙে চুরচুর হয়ে পড়ে গেল ।

"কেন? কেন আমাকে ফেলে গেলে?কি অপরাধ করেছি আমি? আমার কারো সাথে সম্পর্ক ছিল না।" নারীর চোখে কষ্টের ছাপ পড়লো।

হঠাৎ সে ফুঁসে উঠলো, "তুই জানতি! তারপরও আমাকে বিশ্বাস করলি না!"

"রু-রুনা বি-বিশ্বাস কর....আ-আমি কিছু জানি না! আমি তো শুধু----"

"তুই মরলে আমি শান্তি পাব!"

"না!....রু-রুনা...প্লিজ!"

রুনার পক্ষ হতে ছুরিকাঘাত আসতে দেখা গেল...!

Bạn đang đọc truyện trên: AzTruyen.Top